• ২১ মে, ২০২৫

তিতুমীরের শিক্ষার্থীদের এবার রেললাইন অবরোধ

তিতুমীরের শিক্ষার্থীদের এবার রেললাইন অবরোধ

সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা এবার তাদের স্বাধীন বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে সড়ক অবরোধের পাশাপাশি রেললাইন অবরোধ করেছেন। মহাখালী রেল ক্রসিংয়ে তাদের অবরোধের কারণে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি কর্মসূচির অংশ হিসেবে সড়ক অবরোধের পাশাপাশি সরকারি তিতুমীর কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এবার রেলপথ অবরোধ করেছেন। সোমবার বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর মহাখালী রেল ক্রসিং অবরোধ করেন তারা। এর আগে বিকেল পৌনে তিনটায় কলেজের সামনে থেকে মহাখালির দিকে মিছিল নিয়ে আসেন তারা। অবরোধ কর্মসূচির কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে কর্মজীবি নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন শ্রেনীপেশার মানুষকে।

এর আগে এদিন দুপুর সাড়ে ১২টায় তিতুমীর কলেজের মুল গেটের সামনের সড়কে বাঁশ ফেলে অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা।

ঢাকা রেলওয়ে থানার ওসি জয়নাল আবেদিন বিকেল সাড়ে ৫টায় যুগান্তরকে বলেন, মহাখালি এলাকায় রেলপথ অবরোধ করে রেখেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। আমরা ঘটনাস্থলে অবস্থান করছি। অবরোধের কারণে ঢাকার সঙ্গে ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। 

বনানী থানার ওসি রাসেল সারোয়ার যুগান্তরকে বলেন, শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে ট্রেন এবং যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে জাহাঙ্গীর গেইটগামী ও জাহাঙ্গীর গেইট থেকে বনানীর দিকে আসা গাড়িগুলো ফ্লাইওভার দিয়ে চলাচল করছে। অবরোধের কারণে জাহাঙ্গীর গেট থেকে মহাখালির দিকে আসা সড়কটি বন্ধ রয়েছে। ফলে আশপাশে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মহাখালি রেলগেটের পূর্ব অংশে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও বিজিবি সদস্যদের দেখা গেছে। 

অন্যদিকে রেল লাইনের উপর বসে থাকতে দেখা গেছে, ২০-৩০ জন শিক্ষার্থীকে। শতাধিক শিক্ষার্থীকে পাশে দাঁড়িয়ে শ্লোগান দিতে দেখা গেছে। 

এদিকে বিজিবি সদর দফতর থেকে জানানো হয়েছে, মহাখালিতে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের রেললাইন অবরোধে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আইন-শ্ঙ্খৃলা বাহিনীকে সহযোগিতায় ৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। 

আন্দোলনে অংশ নেওয়া তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী নুর মোহাম্মদ বলেন, পূর্বের ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ আমরা রেলপথ ও সড়কপথ অবরোধ করেছি। যৌক্তিক দাবিতেই আমরা আন্দোলন করছি। 

আন্দোনকারী অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা অনেকের দ্বারস্থ হয়েছি। শিক্ষা উপদেষ্টা আমাদের দাবি প্রত্যাখান করেছেন। আমরা এখন আর কারো দ্বারস্থ হবো না। রাষ্ট্রকেই আমাদের কাছে আসতে হবে। দাবি পুরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। এদিকে আরেক শিক্ষার্থী আলভী জানান, কলেজের সামনেও অবরোধ অব্যাহত রয়েছে। এদিকে অবরোধের মুখে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে নোয়াখালির উদ্দেশ্যে যাত্রা করা উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি আবার কমলাপুরের দিকে ফিরে গেছে। 

এর আগে এদিন দুপুর পৌনে একটার দিকে তিতুমীর কলেজ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, কলেজের সামনের সড়কে বাঁশ ফেলে মহাখালি-গুলশান লিংক রোড বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এতে বন্ধ হয়ে যায় ওই সড়কে চলাচলকারী সব ধরণের যান চলাচল। আশপাশের সড়ক এবং বিভিন্ন অলিগলিতে দেখা দেয় তীব্র যানজট। চরম ভোগান্তিতে পড়েন ওই এলাকায় সড়কে চলাচলকারী মানুষজন। বিশেষ করে অসুস্থ নারী পুরুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে বেশি। গন্তব্যের উদ্দেশ্যে বের হয়ে মাঝ রাস্তায় আটকে গিয়ে হেঁটেই রওয়ানা হতে দেখা যায় অনেককে। কলেজের সামনের সড়ক বাশ দিয়ে আটকে দেওয়ার কারণে রিকশা, সিএনজি, মোটরসাইকেল, বাসসহ সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বেশ কয়েকজন মোটরসাইকেল চালকের বাকবিতন্ডা হতেও দেখা যায়। 

আজিম উদ্দিন নামে এক পথচারি বলেন, রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় মানুষজনের কষ্ট হচ্ছে অনেক। প্রতিদিনই সড়ক বন্ধ করে দিয়ে আন্দোলন চলছে। সরকারকে এর সুরাহা করা প্রয়োজন। মানুষকে কষ্ট দিয়ে কি লাভ? দ্রুত এসবের সমাধান করা উচিত। 

ঢাকা বাংলা রিপোর্ট

How puzzling all these changes are! I'm never sure what I'm going to turn into a tidy little room.