বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্র রাজনীতি নিয়ে অস্থিরতা বাড়ছে। ছাত্রদল এবং ছাত্রশিবিরের মধ্যে ক্রমশ বাড়ছে সংঘাত। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ছাত্র রাজনীতির ভবিষ্যৎ কেমন হবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবির এবং ছাত্রদল মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। যার ফলে সংঘর্ষও ঘটেছে। তবে, ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যে দাবি উঠেছিল, তার বাস্তবায়ন এখনও অনিশ্চিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্রশিবিরের উপস্থিতি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। গত ১৯শে নভেম্বর, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আয়োজিত একটি মতবিনিময় সভায় ছাত্রশিবির অংশগ্রহণ করে। তবে সভায় ছাত্রশিবিরের উপস্থিতি নিয়ে প্রথমে ছাত্রদল আপত্তি জানায়। পরে এতে যোগ দেয় কিছু বাম সংগঠনও। সভার শুরুতে একদিকে ছাত্রদল, অন্যদিকে ছাত্রশিবির পাল্টাপাল্টি স্লোগান দেয়। শেষ পর্যন্ত বৈঠকটি পণ্ড হয়ে যায়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নেতা রিফাত মাহমুদ বিবিসি বাংলাকে জানান, তারা বিশ্বাস করেন, ছাত্রশিবিরের উপস্থিতি ক্যাম্পাসে অস্বস্তির সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন, ছাত্রশিবির যদি কার্যক্রম চালাতে চায়, তাদের প্রথমে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে। অপরদিকে, ছাত্রশিবিরের নেতারা জানান, তারা খুব শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরতে চান। তবে বিরোধিতার মুখে এটি কতটা সম্ভব তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের আত্মপ্রকাশের পর, ছাত্রদল এবং বাম সংগঠনগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু করেছে। চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছাত্রদল এবং ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষের খবরও পাওয়া গেছে।যদিও ছাত্রদল এবং ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতারা একে অপরের বিরুদ্ধে বিরোধিতা করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে এই ধরনের পরিস্থিতি অন্য বিশ্ববিদ্যালয়েও বিরাজ করছে।
এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবি তুললেও তারা স্পষ্টভাবে বলেছেন, তারা ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ চায় না। তাদের উদ্দেশ্য হলো, লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা। যেখানে ছাত্র সংগঠনগুলো মূলত রাজনৈতিক দলগুলোর এজেন্ডা অনুসরণ করে। ছাত্রশিবির, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা একে অপরের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বিরোধিতা থাকলেও, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভায় তারা একসঙ্গে বসে আলোচনা করছেন।
এখন প্রশ্ন হলো, আগামী দিনে এই সংঘাত এবং বিরোধিতার মধ্যে ছাত্র রাজনীতি কেমন রূপ নেবে? এর ফলাফল কী হবে। সূত্র : বিবিসি বাংলা।
শ.হা/০২-১২-২০২৪ ইং।