Loading...

  • ০৫ অক্টোবর, ২০২৫

ঋণ পুনর্গঠন উদ্যোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর নজরদারি

ঋণ পুনর্গঠন উদ্যোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর নজরদারি

বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ঋণ পুনর্গঠন, খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণ ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ঠেকাতে নতুন আইনগত পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছেন।

ঢাকা : করোনা মহামারি, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট ও সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য ঋণ পুনর্গঠন প্রক্রিয়া জোরদার করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গুলশানে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ৩৬৫ দিন’ শীর্ষক সংলাপে রোববার গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানান, এ পর্যন্ত ১২০০-এর বেশি ঋণ পুনর্গঠনের আবেদন এসেছে, যার মধ্যে ২৫০টি নিষ্পত্তি হয়েছে এবং বাকি আবেদন প্রক্রিয়াধীন।

গভর্নর বলেন, প্রতিটি আবেদন তিন পক্ষ—বাংলাদেশ ব্যাংক, ঋণ প্রদানকারী বাণিজ্যিক ব্যাংক ও উদ্যোক্তা—এর যৌথ যাচাইয়ের মাধ্যমে দেখা হচ্ছে, যাতে কোনো অসাধু প্রতিষ্ঠান সুযোগ নিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করতে না পারে। সাধারণীকরণের পরিবর্তে প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অবস্থা, সম্ভাব্য সমাধান এবং অতীত রেকর্ড যাচাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।

খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে তিন মাস করা হয়েছে। প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ বা ন্যূনতম মূলধন রিকোয়ারমেন্ট (১০ শতাংশ) পূরণ না করা ব্যাংকগুলোকে লভ্যাংশ বিতরণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। গভর্নরের ভাষায়, “প্রথমবারের মতো এই নীতি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে।”

বাংলাদেশ ব্যাংক অধ্যাদেশ ১৯৭২-এ মৌলিক পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও আমলাতান্ত্রিক বাধা দূর করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়বদ্ধতা ও স্বশাসন নিশ্চিত করার পাশাপাশি অতীতের রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন ঠেকাতে সুরক্ষা ব্যবস্থা যুক্ত করা হবে।

এছাড়া রিপোজিট ইন্স্যুরেন্স সীমা ১ লাখ থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ করা হচ্ছে। ব্যাংক রেজুলেশন নীতি প্রণয়ন করে তারল্য সংকট বা সুশাসনের মৌলিক সমস্যায় পড়া ব্যাংকে সরাসরি হস্তক্ষেপের ক্ষমতা বাংলাদেশ ব্যাংক হাতে নেবে। উচ্চ আদালতে রিট করে ঋণ আদায় প্রক্রিয়া আটকে দেওয়ার প্রবণতা রোধে আইন সংশোধনের উদ্যোগও চলছে, এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনার কথা জানান গভর্নর।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান। প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।