Loading...

  • ২১ মে, ২০২৫

গ্রীষ্মে লোডশেডিংয়ের শঙ্কা

গ্রীষ্মে লোডশেডিংয়ের শঙ্কা

গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ সংকট এবং লোডশেডিং বাড়ার আশঙ্কা। জ্বালানি অভাব, বকেয়া বিল ও ডলার সংকটের কারণে বিদ্যুৎ বিভাগের সামনে চ্যালেঞ্জ। সরকারের বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের উদ্যোগ এবং নেপাল থেকে আমদানি পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত।

ঢাকা : চাহিদার অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা থাকলেও প্রয়োজনীয় জ্বালানির অভাবের কারণে এবারও গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ সংকট বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহে অনিশ্চয়তা, আমদানির সমস্যা এবং বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের বকেয়া পরিশোধে বিলম্বের কারণে লোডশেডিং বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। সংকটের মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে জ্বালানি সরবরাহের সমস্যা, ঋণের বোঝা এবং ডলার সংকট।

বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, গ্রীষ্মে সারা দেশে বিদ্যুৎ চাহিদা বৃদ্ধি পাবে, যা সরবরাহ করতে গিয়ে লোডশেডিং বাড়বে। মার্চে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার মেগাওয়াট এবং এপ্রিলে ১৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদা থাকার কথা রয়েছে। গত বছর একই সময়ে ১২ থেকে ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছিল, এবার তা বাড়িয়ে ১৩ থেকে ১৫ হাজার মেগাওয়াট হতে পারে।

লোডশেডিংয়ের সম্ভাবনা:

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান সম্প্রতি এক সভায় বলেন, "এই গ্রীষ্মে এক হাজার ৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং হতে পারে।" তিনি এসি ব্যবহারে সতর্কতা জানিয়ে বলেন, এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হতে পারে।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের পরিকল্পনা:

সরকার বিদ্যুৎ ব্যবহারে ১৫% সাশ্রয়ের লক্ষ্য নিয়েছে। এজন্য জ্বালানি-সাশ্রয়ী বাল্ব, ফ্যান, হোম অ্যাপ্লায়েন্স ব্যবহার বাড়ানোর পাশাপাশি এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ এ বিষয়ে দেশের সব জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে।

গ্যাস সংকট:

বিদ্যুৎ সংকটের পাশাপাশি, গ্যাস সংকটও ভোগাবে গ্রাহকদের। পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা চার হাজার ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট, তবে সরবরাহ হচ্ছে দুই হাজার ৭৭৭ মিলিয়ন ঘনফুট। এতে গ্যাসের দৈনিক ঘাটতি এক হাজার ৪২৩ মিলিয়ন ঘনফুট।

বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা:

বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৭ হাজার ৮২০ মেগাওয়াট, তবে গত বছর উৎপাদিত সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ ছিল ১৬ হাজার ৪৭৭ মেগাওয়াট। বিপিডিবির কাছে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বকেয়া প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে ফার্নেস অয়েলচালিত কেন্দ্রগুলোর পাওনা ছয় হাজার কোটি টাকা। সংকটের মধ্যে, সরকারি কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর জন্য নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি:

এদিকে, নেপাল থেকে জুন মাসে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানির কথা রয়েছে। এই চুক্তি গ্রীষ্মে বাড়তি চাহিদা মেটানোর জন্য করা হয়েছে।