Loading...

  • ০৫ জুলাই, ২০২৫

নতুন টাকা এখন ব্যাংকের জন্য গলার কাঁটা

নতুন টাকা এখন ব্যাংকের জন্য গলার কাঁটা

নতুন নোট বিনিময়ের সিদ্ধান্ত স্থগিত হওয়ায় ঢাকার ব্যাংকগুলোতে সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ৮০টি ব্যাংক শাখার ভল্টে জমে থাকা নতুন নোট ফেরত নিচ্ছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ফলে ব্যাংকগুলোর জন্য নতুন টাকা এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ঢাকা: ঈদের আগে নতুন নোট বিনিময়ের জন্য বিশেষ কাউন্টার খুলে না দেওয়ার সিদ্ধান্তের পর ব্যাংকগুলোর সামনে সৃষ্টি হয়েছে এক নতুন সমস্যা। ঢাকার বিভিন্ন ব্যাংকের ৮০টি শাখার ভল্টে ৫, ২০ ও ৫০ টাকার নতুন নোটের বিশাল পরিমাণ মজুদ থাকা সত্ত্বেও, তা কোনো কাজে আসছে না। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও এসব নতুন নোট ফেরত নিচ্ছে না, ফলে শাখাগুলোর ভল্টে জমে থাকা নোটগুলো এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, প্রতিটি ব্যাংকের ভল্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা করার জন্য একটি সীমা নির্ধারিত থাকে। এর বেশি টাকা জমা হলে তা পার্শ্ববর্তী সোনালী ব্যাংক বা বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘চেস্ট’ শাখায় পাঠাতে হয়। সাধারণত ৫০০ ও ১ হাজার টাকার নোটে জায়গা কম লাগে, কিন্তু ঈদের জন্য নতুন নোট বিতরণের পরিকল্পনা স্থগিত হওয়ার পর ব্যাংকগুলো বিপাকে পড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, "প্রতিবছরের মতো ঈদের আগে নতুন নোট বিতরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। ৬৫ লাখ টাকার সমপরিমাণ নতুন নোট নির্দিষ্ট শাখায় পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ছবি থাকায় বিতরণ স্থগিত করা হয়েছে। ফেরত নেয়ার প্রক্রিয়ায় কিছুটা সময় লাগবে।"

এদিকে ব্যাংকগুলোর ভল্টে মজুদ থাকা নতুন নোট এখনও বিনিময় করা সম্ভব হচ্ছে না, যা ঈদের পর আরও বড় সংকট তৈরি করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

দুর্বল ব্যাংকগুলো বেশি বিপদে

নতুন নোট বিনিময় স্থগিত হওয়ার কারণে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে দুর্বল ব্যাংকগুলো। কিছু ব্যাংক গ্রাহকদের জমা টাকা ফেরত দিতে পারছে না, অথচ তাদের ভল্টে ৬৫ লাখ টাকার সমপরিমাণ নতুন নোট মজুদ রয়েছে। এর মধ্যে জনতা ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের শাখাগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

নতুন ডিজাইনের নোট আনা: দীর্ঘ প্রক্রিয়া

এদিকে, অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন যে, এতদিন পরেও কেন নতুন ডিজাইনের নোট বাজারে আসেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, নতুন নোটের ডিজাইন প্রক্রিয়া অনেক সময়সাপেক্ষ। নোটের ডিজাইন চূড়ান্ত করার পর তা বাজারে আনার জন্য ১২ থেকে ১৮ মাস সময় লাগে। আগের নকশায় ছাপানো নোটে থাকা কাগজ ও কালি মজুদ হওয়ায়, নতুন ডিজাইনের নোট বাজারে আসতে আরও কিছু সময় লাগবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, আগামী এপ্রিলের শেষ অথবা মে মাসের প্রথম দিকে নতুন ডিজাইনের নোট বাজারে আসবে।

সিদ্ধান্তের পরিণতি 
এখন পর্যন্ত নতুন নোট বিতরণ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তের পর, ব্যাংকগুলোতে ব্যাপক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তবে, নতুন ডিজাইনের নোটের মুদ্রণ কার্যক্রম চলছে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে তা বাজারে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সূত্র : সমকাল।