Loading...

  • ২০ আগস্ট, ২০২৫

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে ‘বাণিজ্যে’ জাতি বিভক্ত: সালাহউদ্দিন

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে ‘বাণিজ্যে’ জাতি বিভক্ত: সালাহউদ্দিন

বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে রাজনৈতিক ‘বাণিজ্য’ করে জাতিকে বিভক্ত করা হয়েছে। তিনি সবাইকে ‘বাংলাদেশি পরিচয়’ ধারণ করে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

ঢাকা : মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে রাজনৈতিক ‘বাণিজ্য’ এবং স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ বিভাজন তৈরির সমালোচনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তাঁর মতে, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও এই বিভাজন জাতিকে একীভূত হওয়ার পথে বাধা দিয়েছে।

শনিবার (৯ আগস্ট) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সমস্ত মানুষ মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে এবং স্বাধীনতার পক্ষে ছিল। স্বাধীনতার পর কেউ প্রকাশ্যে স্বাধীনতাকে অস্বীকার করেনি। অথচ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ব্যবহার করে জাতিকে বিভক্ত করা হয়েছে।”

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও বক্তব্যের তাৎপর্য
সালাহউদ্দিনের বক্তব্য মূলত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রচলিত রাজনৈতিক বয়ানকে চ্যালেঞ্জ করে। দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতাসীন শিবিরের দাবি—তারা স্বাধীনতার পক্ষশক্তি, আর বিরোধীরা বিপক্ষ। বিএনপি বরাবরই এই বিভাজনকে ‘রাজনৈতিক অস্ত্র’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট, বিএনপি নিজেদের সর্বজনীন ‘বাংলাদেশি’ জাতীয়তার তত্ত্বকে সামনে এনে রাজনৈতিক মেরুকরণ ভাঙতে চাচ্ছে।

রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কার ও বাংলাদেশি পরিচয়
১৯৭১-পরবর্তী রাষ্ট্রে বৈষম্যহীন, সাম্য ও সামাজিক সুবিচারভিত্তিক কাঠামো গড়ার প্রত্যাশা ছিল—যা সালাহউদ্দিনের ভাষায়, এখনও পূর্ণ হয়নি। তিনি বলেন, সব ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, উপজাতি, ভিন্ন ভাষা, ধর্ম ও সংস্কৃতির মানুষের সমন্বয়েই একটি শক্তিশালী ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন সম্ভব। এজন্য সবার পরিচয় হবে ‘বাংলাদেশি’।

পার্বত্য অঞ্চলে ষড়যন্ত্র প্রসঙ্গ
তিনি সতর্ক করেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করতে হলে জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য। তাঁর মতে, সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় রাজনৈতিক মতভেদ নয়, বরং ঐক্যবদ্ধ ‘বাংলাদেশি পরিচয়’কেই ভিত্তি করতে হবে।

বিশ্লেষণ
বিএনপির এই অবস্থান একদিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকারি সংজ্ঞাকে চ্যালেঞ্জ করছে, অন্যদিকে জাতীয় পরিচয়ের নতুন সংজ্ঞা তুলে ধরছে। নির্বাচনের আগে এই বক্তব্য বিএনপির রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হতে পারে, যেখানে তারা ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’-এর তত্ত্ব দিয়ে বিরোধী ও নিরপেক্ষ ভোটারদের এক ছাতার নিচে আনার চেষ্টা করবে। তবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে ক্ষমতাসীন শিবিরের শক্ত অবস্থানের কারণে এই বয়ান কতটা জনসমর্থন পাবে—তা রাজনৈতিক ময়দানেই প্রমাণ হবে।