ঢাকা, ৭ নভেম্বর ২০২৪: বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে বিশ্বব্যাংক সহযোগিতা করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
পাচারকৃত অর্থ শনাক্তকরণ এবং তা ফেরত আনার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশকে প্রযুক্তিগত সহায়তা ও আইনি পরামর্শ প্রদান করবে সংস্থাটি। পাশাপাশি পাচার রোধে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রশিক্ষণ এবং আর্থিক ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার জন্য কাজ করবে বিশ্বব্যাংক।
বাংলাদেশে অর্থ পাচার অন্যতম সমস্যা। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর অর্থ পাচার হয়েছে। পাচারকৃত এই অর্থ ফেরত আনা বর্তমান সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংক সহযোগিতা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সংস্থার মতে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৪ শতাংশ; তবে সঠিকভাবে সংস্কার কার্যক্রম চালানো গেলে ২০২৬ সালে তা ৫ শতাংশ ছাড়াতে পারে।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক বুধবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে একটি আলোচনা সভায় এই বক্তব্য দেন।
অ্যাসোসিয়েশন অব ফরমার অ্যাম্বাসেডর (আওফা) আয়োজিত এই সভার মূল আলোচনার বিষয় ছিল “বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার উপায়”। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান এবং সভাপতিত্ব করেন আওফার সভাপতি রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আল হাসান।
আবদুলায়ে সেক বলেন, বিশ্বব্যাংকের কাছে বাংলাদেশের পোর্টফোলিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতার প্রেক্ষিতে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার জন্য সরকার বিশ্বব্যাংকের সহায়তা চেয়েছে। এক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক ইতোমধ্যেই বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তবে তিনি মনে করেন, অর্থ ফেরানো কঠিন কাজ, কারণ এর জন্য অনেক ধরনের আইনি এবং আন্তর্জাতিক নীতি মেনে চলতে হবে।
বিশ্বব্যাংক এর আগে বাংলাদেশকে ৪৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছে। ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে বৈষম্য ও দরিদ্র মানুষের হার বেড়েছে। এছাড়া তিনি অর্থনীতি নিয়ে সরকারের প্রকাশিত তথ্য এবং বিশ্বব্যাংকের তথ্যের মধ্যে পার্থক্যের বিষয়ে আলোকপাত করেন। তাঁর মতে, রাজস্ব আয় বর্তমানে জিডিপির ৮.২ শতাংশ, যা দেশীয় উন্নয়নের জন্য যথেষ্ট নয় এবং এ বিষয়ে উন্নয়ন সহায়তা প্রয়োজন।
আওফার সভাপতি রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এএফএম গাউসূল আজম সরকার, ভাইস প্রেসিডেন্ট সাহেদ আখতার, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মাশফি বিনতে শামস এবং রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ প্রমুখ। এ সময়ে বক্তারা প্রকল্প অর্থায়নের পরিবর্তে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে বাজেট সহায়তা চেয়েছেন।
সভায় বক্তারা জানান, বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বাজেট সহায়তার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।