Loading...

  • ০৫ জুলাই, ২০২৫

ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতিশোধে নারীর ভিডিও ছড়িয়ে দিল ছোট ভাই!

ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতিশোধে নারীর ভিডিও ছড়িয়ে দিল ছোট ভাই!

কুমিল্লার মুরাদনগরে ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে গিয়ে এক নারীকে নির্যাতন ও শ্লীলতাহানি করে ভিডিও ছড়িয়ে দেয় ছোট ভাই ও তার সহযোগীরা। র‌্যাবের অভিযানে মূল হোতা শাহ পরান গ্রেপ্তার।

কুমিল্লা : কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীকে নির্যাতন ও শ্লীলতাহানি করে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে র‌্যাব। অভিযুক্তদের একজন ভুক্তভোগীরই পরিচিত এবং ঘটনার মূল হোতা তার আপন ছোট ভাই শাহ পরান।

র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, পারিবারিক বিরোধের জেরে বড় ভাই ফজর আলীর বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে গিয়ে ছোট ভাই শাহ পরান পরিকল্পিতভাবে একদল যুবক নিয়ে ‘মব’ তৈরি করে এই বর্বর ঘটনা ঘটায়।

বাহেরচর গ্রামের শহিদ মিয়ার দুই ছেলে—ফজর আলী ও শাহ পরান। ফজর আলীর সঙ্গে পারিবারিক বিরোধে একপর্যায়ে গ্রাম্য সালিশে শাহ পরানকে জনসমক্ষে চড়-থাপ্পড় মারেন বড় ভাই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিশোধের পথ খোঁজেন শাহ পরান।

ঘটনার কিছুদিন আগে ভুক্তভোগী নারীর মা ফজর আলীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা সুদে ধার নেন। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে গত ২৬ জুন রাতে সুদের টাকা আদায়ের অজুহাতে ফজর আলী ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করেন। এর ২০ মিনিট পর পরিকল্পনা অনুযায়ী শাহ পরানসহ আবুল কালাম, অনিক, আরিফ, সুমন, রমজান এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ জন ঘরের দরজা ভেঙে ঢুকে নারীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে, শ্লীলতাহানি চালায় এবং তার অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে।

পরবর্তীতে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে এলাকায় তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

র‌্যাব জানায়, ইমো অ্যাপে বার্তা পাঠিয়ে শাহ পরান এই মব জড়ো করেন। ঘটনার পরপরই অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে যায়। গোপন তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় গত বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) কুমিল্লার বুড়িচং থানার কাবিলা বাজার এলাকা থেকে শাহ পরানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাহ পরান ঘটনার দায় স্বীকার করে বলেন, বড় ভাইয়ের অপমানের প্রতিশোধ নিতে তিনি নিজেই এই পরিকল্পনা করেন এবং অন্যদের সহায়তায় তা বাস্তবায়ন করেন।

ভুক্তভোগীর মা-বাবা ঘটনার সময় স্থানীয় এক মেলায় ছিলেন। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগেই এই জঘন্য কাণ্ড ঘটানো হয় বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে ২৯ জুন মুরাদনগর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। এ পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।