Loading...

  • ২১ আগস্ট, ২০২৫

সরকারের ভেতরেও আরেকটা সরকার সক্রিয়: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

সরকারের ভেতরেও আরেকটা সরকার সক্রিয়: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরেও আরেকটি গোপন শক্তিশালী সরকার সক্রিয়— এমন মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ঢাকা: “বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরেও আরেকটি সরকার সক্রিয় রয়েছে”— এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

বুধবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর কাওরান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান: এক বছরের অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন তিনি। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ।

দেবপ্রিয় বলেন, “আমরা যাকে সরকার হিসেবে দেখি, তার অভ্যন্তরেও আরেকটি শক্তিশালী ক্ষমতাকেন্দ্র কাজ করছে, যা এখন আর গোপন নয়।”

তিনি বলেন, “বর্তমান সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে, বিশেষত দলীয় নিরপেক্ষতার প্রেক্ষাপটে। নারী, সংখ্যালঘু ও লিঙ্গ বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠীর অধিকার উপেক্ষিত হচ্ছে। যা পূর্ববর্তী কর্তৃত্ববাদী শাসনের স্মৃতি ফিরিয়ে আনে।”

অর্থনীতির দিকেও ইঙ্গিত করে দেবপ্রিয় বলেন, “সরকার বৈষম্যহীনতা নিয়ে এসেছে বটে, তবে তা অর্থনৈতিক সংস্কারে প্রতিফলিত হয়নি। গরিব থেকে শুরু করে উৎপাদনশীল উদ্যোক্তারা কেউই বাস্তব সুফল পাননি।”

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, “এই সরকার চিরস্থায়ী নয়। একটি নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালনের জন্য এসেছে। তাদের ‘ডেস্ক ক্লিয়ারিং’ লিস্ট থাকা উচিত।”

প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “তাকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে জানাতে হবে— কী কাজ সম্পন্ন হয়েছে আর কী বাকি আছে।”

তিনি প্রশ্ন তোলেন, “এই অন্তর্বর্তী সরকার কি সত্যিকার অর্থে সহিংসতামুক্ত, নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে সক্ষম?” তিনি আরও বলেন, “বর্তমান প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে তা সম্ভব নয়। এ অবস্থায় সেনাবাহিনীর বড় পরিসরে সম্পৃক্ততা প্রয়োজন— অস্ত্র উদ্ধার, নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ গঠনে।”

আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সারা হোসেন, লেখক ফরহাদ মজহার, গবেষক আলতাফ পারভেজ, অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, নির্মাতা কামার আহমাদ সাইমন, বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান, গবেষক মাহা মীর্জা ও সহুল আহমদ।

বৈঠকের শুরুতে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

শেষে দেবপ্রিয় বলেন, “মূল প্রশ্ন এখন— সরকার কীভাবে এখান থেকে উত্তরণ ঘটাবে? গত এক বছরের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো— আগামী এক বছরের নির্গমনের পথনির্দেশ বা ‘এক্সিট পলিসি’। এ বিষয়ে নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম ও উদ্যোক্তাদের স্পষ্ট অবস্থান নেওয়ার এখনই সময়।”