বহুমুখী চাপের মুখে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি-জুন মেয়াদের দ্বিতীয় দফার মুদ্রানীতি প্রণয়ন নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন বহুমুখী চাপ অনুভব করছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) দাবি করেছে, মূল্যস্ফীতির হার কমানো না গেলে নীতিগত সুদের হার বাড়ানোর মাধ্যমে কঠোর মুদ্রানীতি অনুসরণ করা উচিত। অপরদিকে ব্যবসায়ীরা মনে করেন, সুদের হার আর বাড়ানো যাবে না এবং বিদ্যমান হার স্থিতিশীল রেখে ধাপে ধাপে কমাতে হবে। সাধারণ মানুষ চায়, মূল্যস্ফীতি কমানোর পাশাপাশি টাকার মান এবং আয় বৃদ্ধি করা হোক। অর্থনীতিবিদদের মতে, একপাক্ষিক পদক্ষেপের পরিবর্তে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।  

কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণের জন্য নীতি সুদের হার বাড়ানোর চিন্তা করলেও, বর্তমানে তারা নতুন মুদ্রানীতি তৈরির জন্য সব অংশীজনের মতামত নিচ্ছে। আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী, সুদের হার বাড়ানো এবং ঋণের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে ব্যবসায়ীদের মতামত অনুযায়ী, ঋণের সুদের হার আর বাড়ানো যাবে না। তারা চাইছেন সুদের হার কমিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যকে চাঙা করা হোক এবং ডলারের দামও স্থিতিশীল রাখা হোক।  

এদিকে, চলতি অর্থবছরের মুদ্রানীতি প্রণয়ন বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শীঘ্রই অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে বৈঠক করবে এবং তাদের মতামতের ভিত্তিতে একটি প্রতিবেদন তৈরি করবে। বিভিন্ন অংশীজনের মতামত এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সুপারিশ তৈরি করা হবে। এর মধ্যে একটি সুপারিশ হতে পারে, নীতি সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা এবং অন্যটি হতে পারে সুদের হার না বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি লাগাম টানা।  

আইএমএফের ঋণ চুক্তির আওতায় বাংলাদেশে বর্তমানে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ রয়েছে এবং তাদের শর্ত অনুযায়ী, মূল্যস্ফীতির হার কমানো না until মুদ্রানীতি কঠোর করতে হবে। তবে ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, সুদের হার বাড়ানোর ফলে ঋণের প্রবাহ কমে যাবে এবং তাদের জন্য আরও বেশি চাপ সৃষ্টি হবে।  

এদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে পারে, তবে প্রস্তুতির প্রয়োজনে তারিখটি পরিবর্তনও হতে পারে।