সিরিয়ায় আসাদের শাসন থেকে নতুন পরিবর্তন

সিরিয়ার বর্তমান প্রশাসন দেশটির দীর্ঘকালীন শাসক বাশার আল-আসাদের শাসন থেকে মুছে ফেলতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আসাদের রাজনৈতিক দল বাথ পার্টি বিলুপ্ত করার পাশাপাশি সিরিয়ার সংবিধানও বাতিল করা হয়েছে। সিরিয়ার সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীও বিলুপ্তির তালিকায় রয়েছে।

এদিকে, সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা জানিয়েছেন, আগামী দিনে দেশের সকল অংশীজনদের নিয়ে একটি ন্যাশনাল ডায়লগ কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হবে এবং সবার মতামতের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী সরকার গঠন করা হবে।

গত বছরের ডিসেম্বরে ইসলামপন্থি গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে। আসাদের শাসনামলে ৬০ বছরের বেশি সময় ধরে সিরিয়ায় ক্ষমতায় ছিল বাথ পার্টি। নতুন সরকার আসাদ আমলের পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে সরকারি চাকরিজীবীদের তিন ভাগের এক ভাগ ছাঁটাই করার পরিকল্পনা এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেসরকারি খাতে হস্তান্তর করার ইচ্ছা।

এছাড়া, নতুন সরকার দাবি করেছে যে তারা সরকারি অর্থ অপচয় ও দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য এসব পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে, চাকরি হারানো কর্মকর্তারা বিক্ষোভ করেছে।

আলজাজিরা প্রতিবেদনে জানায়, দামেস্কে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে শারা আশ্বস্ত করেছেন যে, বিদ্যমান সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকেও নতুন সিরিয়ায় প্রতিনিধিত্বের সুযোগ দেওয়া হবে। যদিও এখনও সিরিয়ায় নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি, তবে শারা জানিয়েছেন যে দেশে আদমশুমারি করতে ৪ বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আবাজিদও জানিয়েছেন, কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ করে দেওয়া হবে, যেগুলো মূলত সম্পদ আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল। বর্তমানে দেশে প্রায় ১৪ লাখ সরকারি চাকরিজীবী থাকলেও, তাদের মধ্যে ৯ লাখই সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন, বাকি ৪ লাখের কাজ নেই বা তারা অনুপস্থিত থাকেন। এই পরিস্থিতিতে বেশ কিছু চাকরিজীবীকে ছাঁটাই করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

এছাড়া, নতুন সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বর্তমান প্রশাসনকে চলমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা এবং একটি কার্যকরী সরকার গঠন করার জন্য ৫ লাখ ৫০ হাজার থেকে ৬ লাখ সরকারি কর্মচারী প্রয়োজন, যার মানে অর্ধেক সরকারি চাকরিজীবীকেই ছাঁটাই করা হতে পারে।