বরিশাল: আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, যিনি একসময় তার বাড়িতে বস্তায় বস্তায় টাকা রাখতেন, সেই ব্যক্তির এখন দেশে শুধু তিনটি বাড়ি ছাড়া আর কিছুই নেই। এমন পরিস্থিতিতে যখন বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়, তখন আলোচনায় উঠে আসে তার পালিত মেয়ে সুমাইয়া হোসেনের নাম।
নিঃসন্তান আমু বহু বছর আগে তার শ্যালিকা মেরী আক্তারের কন্যা সুমাইয়াকে পালক মেয়ে হিসেবে গ্রহণ করেন। বর্তমানে সুমাইয়া দুবাইতে বসবাস করছেন এবং সেখানে এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর সঙ্গে বিয়ে করেছেন। সম্প্রতি শহরে আলোচনার ঝড় তোলা বিষয় হল, আমু allegedly শতকোটি টাকা অবৈধভাবে সুমাইয়ার কাছে পাঠিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক নেতা বলেন, আমু সব জায়গা থেকে টাকা পেতেন। নগদ টাকা লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে কাজ করতেন তার ভায়রা ফখরুল মজিদ কিরন, যিনি একটি রহস্যময় চরিত্র।"
শিল্পমন্ত্রী থাকাকালে আমুর এপিএস হিসেবে দায়িত্ব পালন করা কিরন, আমুর কাছ থেকে কখনও আলাদা হয়নি। তিনি বর্তমানে সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ হুমায়ুনের এপিএস ছিলেন। কিরনের বাড়ি ঢাকার নরসিংদী জেলায় হলেও, ঝালকাঠিতে তার কার্যক্রম ছিল ব্যাপকভাবে প্রসারিত। এখানেই তিনি আমুর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও সম্পদ হস্তান্তর দেখাশোনা করতেন।
নলছিটি উপজেলার একজন আওয়ামী লীগ নেতা, যিনি ইউপি চেয়ারম্যানও, বলেন, "আমুর সঙ্গে দেখা করতে হলে কিরনের অনুমতি নিতে হতো। উন্নয়নমূলক কাজের সব ভাগ-বাটোয়ারা তিনি করতেন। কিরনের কথার বাইরে আমু এক পা-ও চলতে পারতেন না। পরিস্থিতি এমন ছিল যে, কিরন ছিল আমুর ছায়া। এই কিরনের মাধ্যমেই আমু নির্বাচনি এলাকা থেকে শত শত কোটি টাকা আয় করেছেন, এবং এখন এই টাকা প্রায় পুরোপুরি সুমাইয়ার কাছে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।"
এই বিষয়ে কথা বলার জন্য আমু এবং কিরনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, তাদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। মোবাইল ফোনে খুদে বার্তা পাঠালেও, কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম গণমাধ্যমকে বলেন, আমির হোসেন আমুর বাসা থেকে পাঁচ কোটি টাকা উদ্ধারের বিষয়ে একটি জিডি করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা রাখা হয়েছে। পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।"