• ২২ জানুয়ারী, ২০২৫
CLOSE

মামলা করতে চাপ প্রলোভন

মামলা করতে চাপ প্রলোভন

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের ঘিরে একটি সঙ্ঘবদ্ধ চক্র মামলা বাণিজ্যে নেমেছে। এরা নিহতদের কারো কারো পরিবারের লোকজনকে চাপ এবং প্রলোভন দিয়ে মামলা করাতে বাধ্য করছে। এসব মামলায় নির্দোষ ব্যক্তিদের নাম ঢুকিয়ে দিয়ে হয়রানি করছে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় রিকশা চালক কামাল মিয়া গত ১৯ জুলাই পল্টনের বটতলা গলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।  একদিকে স্বামীকে হারিয়ে ভবিষ্যত অন্ধকার, অন্যদিকে  স্বামী হত্যার ঘটনায় মামলা করার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তির প্রলোভন, চাপ। সব মিলিয়ে এক কঠিন সমস্যার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন কামাল মিয়ার স্ত্রী ফাতেমা। তিনি জানিয়েছেন, কেউ বাসায় গিয়ে তাকে মামলা করার জন্য অনুরোধ করেছেন। মেয়েকে ভালো চাকরিতে ঢুকিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ফাতেমার প্রশ্ন, "কি স্বার্থে  তাকে মামলা করতে উৎসাহিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে? ছে, কিন্তু তাদের কী স্বার্থ থাকতে পারে? কেন মামলা করার জন্য এত চাপ দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আমি স্বামী হারিয়েছি, কেন দোষীদের অভিযুক্ত না করে অন্যদের মামলায় জড়াবো?  নির্দোষ মানুষকে জড়ালেতো  আল্লাহর কাছে আমার জবাবদিহি করতে হবে।"

তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে তাঁর পাশের ভাড়াটিয়া এক অচেনা ব্যক্তিকে নিয়ে এসে মামলার জন্য প্রস্তাব দেন। আরও কয়েকজন তার সাথে যোগাযোগ করেছেন, তবে তিনি সবাইকে বলেছেন যে তিনি একটি মামলা করেছেন এবং আর কোনো মামলা করতে চান না।

তবে জানা গেছে, কামাল মিয়ার নিহত হওয়ার পর তাঁর স্ত্রী ফাতেমা বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অথচ, ৩০ অক্টোবর শাহরিয়ার শুভ নামের একজন লোক আদালতে ২৮১ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। যার সাথে কামালের স্ত্রী কোনো সম্পর্ক জানেন না। পল্টন থানা পুলিশ আদালতে জানায়, কামালের ঘটনায় ইতোমধ্যেই মামলা করা হয়েছে।

ফাতেমা শাহরিয়ার শুভ নামের কাউকে চেনেন না দাবি করে বলেন, মারা গেছে আমার স্বামী, ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আমার পরিবার, সে কেন মামলা করবে? আমার স্বাক্ষর ছাড়া কীভাবে মামলা করা হলো? যদি আমি তার খোঁজ পাই, তবে তার বিরুদ্ধে মামলা করব।"

এছাড়া, বিভিন্ন মামলায় দেখা গেছে, ভুক্তভোগী পরিবারগুলি আসামিদের বিষয়ে অবগত নয়। এমনকি, অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক শত্রুতা বা ব্যবসায়িক বিরোধের কারণে অভিযোগ আনা হচ্ছে। এক্ষেত্রে, বেশ কিছু ক্ষেত্রে টাকা নিয়ে মামলার নাম বাদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে, যা ইতোমধ্যেই কয়েকটি কথোপকথনের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেছেন, "  টাস্কফোর্স গঠন করে এসব ভুয়া মামলার পেছনে জড়িতদের বের করা উচিত।"

সাবেক আইজিপি মুহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, " কেউ মিথ্যা মামলা করলে তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২১১ ধারায় ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।"

এছাড়া, পুলিশ সদরদপ্তরের মুখপাত্র এআইজি ইনামুল হক সাগর বলেছেন, "মামলার সঠিক তথ্য যাচাই করে বাদীকে মামলা রেকর্ড করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।"

আন্তর্জাতিক মহলে ভুয়া মামলার প্রবণতার দিকে ইঙ্গিত করে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেছেন, ভুয়া মামলার কারণে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে।

এভাবে একাধিক ভুয়া মামলা এবং তাদের পেছনে থাকা রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত কারণে মামলাবাজির প্রবণতা বেড়ে চলেছে, যার ফলে নিরপরাধ ব্যক্তিরাও ফাঁসছেন। তথ্যসূত্র: সমকাল। 
শ.হা/২৩-১১-২০২৪ ইং।

ঢাকা বাংলা রিপোর্ট

Alice felt a very short time the Queen never left off staring at the Mouse's tail; 'but why do you.