Loading...

  • ২১ মে, ২০২৫

খাদ্য সহায়তা কমানোয় দেশে ফিরতে চান রোহিঙ্গারা

খাদ্য সহায়তা কমানোয় দেশে ফিরতে চান রোহিঙ্গারা

রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা ৫২% কমানোর পর ক্যাম্পে চরম হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। রোহিঙ্গারা এই সংকটের মধ্যে স্বদেশ মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার দাবি জানিয়েছেন। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফরের সময় এই পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে, তবে কার্যকর সমাধান নিয়ে সংশয় রয়েছে। খাদ্য সংকটের কারণে রোহিঙ্গারা উদ্বিগ্ন, এবং বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের যৌথ উদ্যোগে তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ঢাকা: জাতিসংঘের মহাসচিব যখন বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করবেন, ঠিক তার আগে রোহিঙ্গাদের মাসিক খাদ্য সহায়তা অর্ধেকেরও বেশি কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগে জনপ্রতি ১২.৫ ডলার বরাদ্দ থাকলেও, আগামী মাস থেকে তা কমে ৬ ডলারে দাঁড়াবে। এই খবর শোনার পর রোহিঙ্গারা তাদের রেশন সংগ্রহ করে রেখে দিয়েছেন, কারণ তারা জানেন, কম রেশনের ফলে তাদের জীবিকা চালানো কঠিন হয়ে পড়বে।

বৃহস্পতিবার, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যখন কথা হয় আজিজুল হকের সঙ্গে, তিনি বললেন, “আগামী মাস থেকে রেশন কমানো হবে। তাই ডিম, ডাল, চিনি এগুলো নিয়ে রেখেছি। কমানো হলে আমাদের জন্য বড় কষ্ট হবে।” অনেক রোহিঙ্গাই এই ঘোষণার পর নিজেদের দেশে ফেরত যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস কক্সবাজারে চার দিনের সফরে আসছেন, যার মধ্যে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করার কথা। এই সফরের সময় রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তার সংকট নিয়ে নানা আলোচনা হতে পারে, কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে এখনও সন্দেহ রয়েছে।

শরণার্থী ও ত্রাণ প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, এই সফরের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের মনে আশার সঞ্চার হবে এবং তারা দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠবে। এর পাশাপাশি জাতিসংঘের মহাসচিব রোহিঙ্গাদের সাথে সলিডারিটি ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।

ফলে এপ্রিল থেকে রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খাদ্য সহায়তা ৫২% কমে যাওয়ার ফলে রোহিঙ্গাদের সংকট আরও বাড়বে। এ সময় কিছু রোহিঙ্গা তাদের রেশন সংগ্রহ করে রাখছেন, যাতে পরবর্তী সময়ে চরম সংকটে না পড়তে হয়।

এদিকে, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শরণার্থী কমিশনার জানিয়েছেন, প্রত্যাবাসন একটি দ্বিপাক্ষিক বিষয়, যা বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারের আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারিত হবে।

অপরদিকে, রোহিঙ্গারা এখন খাদ্য সহায়তা কমানোর সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ। অনেকেই বলছেন, “আমরা খাবার চাই না, আমাদের নিজের দেশে ফিরিয়ে নিন।” তাদের মতে, যদি এই সংকটের সমাধান না হয়, তারা আরও ভোগান্তির মধ্যে পড়বে।

এ পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরে যাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সূত্র বিবিসি বাংলা।